বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

মশাবাহিত ছয়টি রোগ

বিডিনিউজ: ডেঙ্গু ছাড়াও বিভিন্ন রোগ মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়।

অনেকের কাছে বর্ষাকাল প্রিয় হলেও মাথায় রাখতে হবে এই সময় মশার উপদ্রবও বাড়ে। আর মশার কামড়ে শুধু ডেঙ্গু নয় হতে পারে চিকনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া-সহ নানান রোগ।

তাই করোনাভাইরাসের মহামারীর সময়ে মশাবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল মশাবাহী ছয়টি রোগ সম্পর্কে।

এনকেফালাইটিস: ‘কিউলেক্স’ নামক মশার মাধ্যমে ছড়ায় এই রোগ। যার প্রকোপ সবচাইতে বেশি এশিয়া মহাদেশে, বিশেষত জাপানে। এর উপসর্গ হল জ্বর ও মাথাব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি আড়াইশ জনের মধ্যে একজনের দেখা দেয় খিঁচুনি, মানসিক ভারসাম্যহীনতা এবং ‘প্যারালাইসিস’ বা অসাড়তা। টিকাই এই রোগের সবচাইতে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

জিকা ভাইরাস: এই রোগের বাহক মশার বৈজ্ঞানিক নাম ‘এইডেস অ্যালবোপিকটাস’। ‘এশিয়ান টাইগার মসকুইটো’ নামেও এর পরিচিতি আছে লোকমুখে। জিকা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ হল চোখ লাল হয়ে যাওয়া, অবসাদ এবং পেশিতে ব্যথা। আশার কথা হল এই ভাইরাসে আক্রান্ত সিংহভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যায় কোনো রকম মারাত্বক জটিলতা ছাড়াই। গর্ভবতী কোনো নারী এই ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হলে, মায়ের কাছ থেকে সন্তানের মাঝেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস।

সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সবসময় ফুল শার্ট ও প্যান্ট পরতে হবে। মশারি ব্যবহার করতে হবে, ‘মসকুইটো রেপেলেন্ট’ ব্যবহার করতে হবে। মোট কথা, মশার কামড় থেকে দূরে থাকতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বর: গতবছর বর্ষাকালে এই রোগের ভয়াবহতা আমরা সবাই দেখেছি। ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’ মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করে। সংক্রমণের শিকার হওয়ার পর রোগের উপসর্গ দেখা দিতে তিন থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। উপসর্গগুলো ‘ফ্লু’ বা মৌসুমি সর্দিজ্বরের মতো, যা আবার কয়েকদিন পরেই ভালো হয়ে যায়। এই রোগ থেকে বাঁচতেও করণীয় একই, মশা থেকে বাঁচতে হবে।

পীতজ্বর: ‘ইয়েলো ফিভার’ নামে পরিচিত এই রোগের বাহকও ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’, যার প্রাদুর্ভাব মূলত আফ্রিকা ও আমেরিকায় সবচাইতে বেশি। জ্বর, মাথাব্যথা, জন্ডিস, পেশি ব্যথা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ প্রধান উপসর্গ। সংক্রমণের চার থেকে সাত দিনের মধ্যেই রোগ সেরে যায়। তবে কিছু রোগীকে নাক, মুখ ও পাকস্থলির রক্তপাতে ভুগতে দেখা যায়। যেসব দেশে এই রোগের প্রকোপ আছে সেখানে যাওয়ার আগে এর টিকা নিতে হবে।   

চিকনগুনিয়া: আমাদের দেশে এই রোগের ভয়ানক প্রকোপ ‍খুব বেশিদিন পুরানো নয়। মশার কামড়ের মাধ্যমে শরীরে রোগের জীবাণু প্রবেশের দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ চোখে পড়া শুরু হয়। জ্বর, মাথাব্যথা, ত্বকের র‌্যাশ, বমিভাব ও বমি ইত্যাদি ছাড়াও শরীর ব্যথা, বিশেষত, হাড়ের জোড়ে ব্যথা হওয়া এর বিশেষ লক্ষণ। রোগ সেরে যাওয়ার পরও এই জোড়ের ব্যথা সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরব্যাপী ভোগাতে পারে। আর এই রোগের বাহকও ওই ‘এডিস অ্যাজিপ্টাই’ মশা।

ম্যালেরিয়া: স্ত্রী ‘অ্যানোফিলিস’ মশা মানবদেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে থাকা পরজীবী জীবাণু প্রথমে মশাকে আক্রান্ত করে। পরে ওই মশা সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে তার শরীরেও জীবাণু প্রবেশ করে। উপসর্গের মধ্যে আছে জ্বর, কাপুনি, মাথাব্যথা।

সঠিক সময়ে এই রোগগুলোর চিকিৎসা করা না হলে প্রায় সবগুলোই প্রাণঘাতি হওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে অ্যারোসল, মশারি, কয়েল, ধুপ, ‘মসকুইটো রেপেলেন্ট’ ইত্যাদি সাধ্য অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে। মশার বংশবিস্তার হতে পারে এমন স্থান ধ্বংস করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888